যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত ফুটবল সাংবাদিক গ্রান্ট ওয়াল মারা গেছেন। গতকাল শুক্রবার রাতে লুসাইল স্টেডিয়ামে আর্জেন্টিনা ও নেদারল্যান্ডের ম্যাচ চলাকালীন সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
স্ট্রোকের কারণে ৪৯ বছর বয়সী গ্রান্টের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। গ্রান্ট মার্কিন সম্প্রচার মাধ্যম সিবিএসে কাজ করতেন।
গ্রান্টের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবল ফেডারেশন। এক বিবৃতিতে তারা জানায়, গ্রান্টের মৃত্যুর খবরে আমরা সবাই বিস্মিত। ফুটবলের প্রতি তার আবেগ ও অঙ্গীকার আমাদের জাগিয়ে তুলতে একটি বড় ভূমিকা পালন করেছে। মানবাধিকারকে এগিয়ে নিতে খেলার শক্তিতে গ্রান্টের বিশ্বাস ছিল। তিনি সবার জন্য অনুপ্রেরণা।
গার্ডিয়ান বলছে, শুক্রবার আর্জেন্টিনা ও নেদারল্যান্ডের কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচের সংবাদ সংগ্রহ করতে লুসাইল স্টেডিয়ামে যান গ্রান্ট। সাংবাদিকদের জন্য নির্ধারিত প্রেস বক্সেই ছিলেন তিনি। ম্যাচ যখন অতিরিক্ত সময়ে ছিল ঠিক তখনই গ্রান্ট মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। আশেপাশের সাংবাদিকরা দ্রুত এগিয়ে আসেন ও চেয়ারগুলো সরিয়ে চিকিৎসককে ডাকেন।
একদল চিকিৎসক প্রেস বক্সে এসে গ্রান্টকে ২০ মিনিটের মতো কার্ডিওপালমোনারি রিসাসিটেশন (সিপিআর) দেন। ম্যাচ শেষ হওয়ার পর তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
গ্রান্টের স্ত্রী ড. চেলিন গাওন্ডার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে এক টুইট বার্তায় জানান, ‘আমার স্বামীকে সাহায্য করায় জন্য তার সহযোগী ও ফুটবল পরিবারকে ধন্যবাদ। বর্তমানে আমি শোকে রয়েছি। ’
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস এক টুইট বার্তায় বলেন, ‘গ্রান্টের পরিবারের ইচ্ছা পূরণে কাতারের ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে কথা বলছে যুক্তরাষ্ট্র। ’
প্রতিবেদনে গার্ডিয়ান জানায়, কাতার বিশ্বকাপের শুরুতে বিভিন্ন সংবাদের শিরোনামে আসেন ক্রীড়া সাংবাদিক গ্রান্ট। কাতারের আহমদ বিন আলি স্টেডিয়ামে সমকামীদের সমর্থনে রেইনবো টি-শার্ট পরেন তিনি। এ ঘটনায় গ্রান্টকে আটক করে স্টেডিয়ামের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
বেশ কিছুদিন ধরেই গ্রান্টের শারীরিক অবস্থা ভালো ছিল না। এর জন্য সোমবার কাতারের একটি হাসপাতালে যান তিনি। এসব কথা জানিয়েছিলেন গ্রান্ট নিজে।
তিনি বলেন, ‘তিন সপ্তাহ ধরে ঠিক মতো ঘুমাতে পারেননি। কাজের ভীষণ চাপ ছিলো। শরীর যেন আর কাজ করছে না। গত ১০ দিন ধরে ঠাণ্ডায় ভুগছি। যুক্তরাষ্ট্র-নেদারল্যান্ডের ম্যাচের দিন অবস্থার আরও অবনতি হয়। বুকের উপরিভাগে চাপ অনুভব করি। চিকিৎসকদের কাছে গেলে তারা ধারণা করেন, আমার ব্রঙ্কাইটিস হয়েছে। তারা অ্যান্টিবডি ও ঠাণ্ডার সিরাপ দিয়েছিলেন।